ভূমিকাঃ মানুষ তার শারীরিক শক্তি দিয়ে কোন কাজে যে শ্রম দেয়, তাই শারীরিক বা কায়িক শ্রম। সৃষ্টিকর্তা আমাদের শারীরিক কাজকর্ম করার জন্য বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করেছেন এসব ব্যবহার করে যে শ্রম দেয়া হয়, তাই শারীরিক বা কায়িক শ্রম। জীবনে বেঁচে থাকার জন্য শারীরিক বা কায়িক শ্রমের গুরুত্ব অপরিসীম।
কায়িক শ্রমের ভূমিকা- কায়িক শ্রমের মাধ্যমে সভ্যতাকে গড়ে তুলেছেন কামার-কুমার, তাঁতি, জেলেসহ আরো অনেকে। এরা নিজ নিজ কাজ করেন বলেই আমরা আরামদায়ক জীবন-যাপন করতে পারি।
কৃষক যদি কষ্ট করে ফসল না ফলাতেন তাহলে সবাই কি খেয়ে বেঁচে থাকত? যদি দর্জিরা পোশাক তৈরি না করতো তবে সবাই কি পরিধান করতো? তাই বলা যায় বর্তমান সভ্যতার মূলে কায়িক শ্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মেধাশ্রমের ভূমিকা- চিন্তা, ভাবনা, জ্ঞান, মনন ইত্যাদি ব্যবহার করে যখন কোন কাজ করা হয়, তাকে মেধাশ্রম বলে। যেমন- এরকম একটি কাজ হল ইতিহাস লেখা।
ইতিহাস হল মানব সমাজের ঘটে যাওয়া ঘটনার সারসংক্ষেপ। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন দিক সারসংক্ষেপ।
রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে ইতিহাস লেখা হয় ; যা সহজ নয়। অনেক মেধা খাটিয়ে তা লিখতে হয়। আবার টিভিতে যখন সংবাদ দেখি, যে সংবাদকর্মী এই সংবাদটি তৈরি করে তাকে সারাদিন থাকতে হয় ফিল্ডে। অনেক কষ্ট করতে হয়।
তারপর সংবাদ প্রস্তুত করতে হয়। প্রস্তুতি শেষে স্ক্রিনে যেতে হয়। স্ক্রিনের সংবাদে সারাদিনের পরিশ্রমই মেধাশ্রমের উদাহরণ। এছাড়াও গল্প, কবিতা লেখা, ছবি আঁকা, বিদ্যুৎ, পাখা আবিষ্কার এসব মেধাশ্রমের মাধ্যমেই অর্জিত।
এসব শ্রম-ঘাম ঝড়াচ্ছেনা ঠিকই ; তবুও করছে ক্লান্ত-শ্রান্ত। আমাদের মস্তিষ্ক খেটেই চলছে অবিরাম।
ছোট্ট একটা উদাহরণ দিলেই আমরা বুঝতে পারবো যে, সভ্যতার বিকাশে কায়িক ও মেধাশ্রম উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় যখন আমাদের একটু আরামের প্রয়োজন হয়, তখন আমরা পাখা বা এসি খুঁজি।
এক্ষেত্রে পাখা কিংবা এসির আবিষ্কার সম্ভবপর হয়েছে কায়িক এবং মেধা উভয় শ্রমেরই বদৌলতে। একইভাবে, সভ্যতার অগ্রগতিতে প্রত্যেকটি আবিষ্কারের মূলে কায়িক এবং মেধাশ্রম দুটোরই গুরুত্ব অপরিসীম।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, সভ্যতার বিকাশে কায়িক এবং মেধাশ্রম উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment